নেশার ঘোরে করা ভুল – ৪

Porikonna 2018-12-16 Comments

This story is part of a series:

–অমন করে বোলো না,,, তুমি পড়িয়েছো বলেই এটা পেয়েছি নাহলে তো একদম ফেইলের খাতায় নাম লিখাতে হতো

—থাক আর বলতে হবে না

–মন খারাপ করোনা সোনা

—আচ্ছা এখন কোথায় ভর্তি হবা?আমিতো মেডিকেল কলেজে পরিক্ষা দিবো,,,চলোনা একসাথে,,

–এই না না আমি আর পড়তে পারবো না, আমার পড়তে ভাল লাগে না

—ভালো লাগেনা বললে হবে না পড়াশোনা করতে তোমার হবেই

–পড়াশোনা করে কি বা হবে?সেই সংসারই তো সামলাতে হবে,,,

—হুম,,,তাও ঠিক কিন্তু সংসারটাতো আমার সাথেই হবে তাইনা (জড়িয়ে ধরে) তাই তোমার পড়তে হবে নাহলে লোকে বলবে নির্ঝরের বউ পড়ালেখা জানে না

–হুম তাহলে আর কি করা বিয়ে করোনা আমায় অন্য কাউকেই করো, আমিও আমার জন্যে কাওকে খুজে নি

—কি বললা তুমি?আমাকে ছেড়ে অন্যের কাছে যাবা? (রেগে)

–(ভয় পেয়ে) আম,,,মি তো ম,,মজা করছিলাম

—হুম আমাকে ছেড়ে অন্য কথাও যাওয়ার কথা চিন্তা করলে আগে তোমায় শেষ করবো তারপর নিজেকে

–সরি সোনা,,,উমম,,ম,,মমম

—(লম্বা করে চুমু খেলাম তার পর ছেড়ে দিয়ে)হুম মাফ করলাম

–এটা কি হলো?

—আদর হলো সোনা,,,কেনো কম হয়ে গেল নাকি?কিন্তু কি করবো বলো তোমায় পূর্নাঙ্গ আদর করার সার্টিফিকেট এখনো আসেনি নাহলে এখনি তোমায় নিয়ে আদর আর সুখের সাগরে সাঁতার কাটতাম

–যাহ,,,তোমার মুখে কিছু আটকায় না,,,,আচ্ছা আমরা বিয়ে করবো কবে আমার যে আর তর সইছে না?

—বাবাহ,,,সাঁতার কাটার এত শখ?চিন্তা করো না বাবাকে তো হাত করেই ফেলেছি বাবা তোমাকে ছেলের বউ হিসেবে পছন্দ করে নিয়েছে আর মা কে বলবো এডমিশন নেবার পর যাতে কিছু বলতে না পারে

–হুম

— হুম (আমি ওর খোপা খুলে চুলে নাক ডুবিয়ে চুল থেকে মাতাল করা ঘ্রাণটা নিতে থাকলাম আর ভাবতে থাকি কিভাবে ওকে নিজের করে নিবো কারণ আমারও যে তর সইছে না)

এইভাবেই চলছিল দিন,,,আমি মেডিকেল এ চান্স পাই তাই ওখানেই ভর্তি হই আর তৃষ্ণা অন্য একটা পাব্লিক ভার্সিটি তে বাংলা সাব্জেক্টে ভর্তি হয় ইচ্ছা ছিলো দুজনেই ডাক্তারি পড়বো বাট ও চান্সটা পেল না,,,দুই তিন মাস যাওয়ার পর মা নিজেই আমার বিয়ের কথা বলার জন্যে হাক-পাক করতে লাগলেন আর আমিও এই সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম।

–বয়স তো আমার কম হলো না এইবার বিয়েটা করে আমাকে উদ্ধার কর

—আমি মানা করলাম কবে করাও বিয়ে আমিতো রাজি

–সত্যি বলছিস বাবা?তাহলে তোর খালাকে বলে সাথির সাথে তোর বিয়েটা পাকা করে ফেলি কি বলিস?

—উহু বিয়েতে রাজি হয়েছি কিন্তু সেটা অন্য কারোর জন্যে। আর তোমাকে বউ খুজতে হবে না, আমার বউ আমি ঠিক করে নিয়েছি আর বাবাকেও তার হবু পুত্রবধুকে দেখিয়েছি

–কোন মেয়ে?কি নাম?মেয়ের বংশ পরিচয় কি?

—চিন্তা করোনা ওর বংশ পরিচয় খুব ভালো আর মেয়েটাকে তুমি চিনো

–কার কথা বলছিস?

—তৃষ্ণার কথা বলছি মা

–তুই এটা ভাবলি কি করে অই কালো মেয়েকে আমার ছেলের বউ করবো। ওর থেকে সাথি যথেষ্ট রূপসী আর তোর সাথে মানাবেও ভাল

—শোন মা আমি যদি কখনো বিয়ে করি তবে তৃষ্ণাকেই করবো নয়তো না

–ভাল করে ভেবে দেখ বাবা তোর মত ফর্সা ছেলের সাথে ওই কালো মেয়েকে মানায় না আর ওকে বিয়ে করলে আমি সমাজের লোকের সামনে ছেলের বউকে পরিচয় করাবো কি করে

–সেটা তোমার বেপার আর ওই মেয়ে ওই মেয়ে বলবানা ওকে নাম আছে ওর ওই নামে ডাকবা,,,আর তূমি ওর সাথে আমার বিয়ে না করালেও আমি মন্দিরে গিয়ে বিয়েটা করবো আর দুজনে আলাদা কোথাও থাকব,,, সো ভেবে দেখো কোনটা তোমার জন্য বেটার

মা রাগে ফুশতে ফুশতে চলে গেলেন,,,এক সময় বাবার পিড়াপীড়িতে রাজি হলেন যতই হোক একমাত্র ছেলে বলে কথা।

তারপর এলো সেই মহেন্দ্র ক্ষন, আমি সাদাধুতি আর লাল সোনালী রঙের মিস্রন যুক্ত পাঞ্জাবি আর মাথায় টোপর পরে আমার প্রেয়সীর অপেক্ষায় আছি, তৃষ্ণার দাদারা তৃষ্ণাকে নিয়ে আসলো, পানপাতা ধরে আছে তার আলতা রাঙা হাত তারপর আস্তে আস্তে হাত নামালো আর আমি তার দিকে তাকিয়ে আবার ঘোরে চলে গেলাম আমার সামনে লাল শাড়ি পরে যেনো কোন অপ্সরা দারিয়ে আছে আমার দিকে চেয়ে একটা লজ্জা মাখা হাসি দিল আর তার আর আমার শুভ দৃষ্টি হলো। একে একে সাত পাক, মঙ্গলসুত্র, ও সিদুর দান হলো। আমি তাকে পেলাম নিজের করে পেলাম, সে শুধু আমার শুধুই আমার।

অবশেষে সে পালকি চড়ে আমার ঘরে আসলো, মা এসে গোমড়া মুখে তৃষ্ণাকে বরন করে, সব আচার অনুষ্ঠানের পর তাকে আলাদা রুমে রাখে আজরাতে আর দেখা হবে না। এই জিনিসটাই বিরক্ত লাগে আমার। এত কষ্ট করে কাছে পেয়েও এই সব রীতিনীতির জন্যে আলাদা থাকতে হবে। অসুবিধা নেই একদিন ই তো।

পরের দিন বউভাত হলো সোনালী রঙের জামদানী শাড়িতে আরও অপরুপা লাগছিল মন চাইছিল এখান থেকে টেনে নিয়ে রুমে গিয়ে ওকে নিজের করে নেই। কিন্তু কিছুই করতে পারলাম না। এটা সেটা করতে করতে দিন গেলো কিন্তু আমি আর ওর থেকে দূরে থাকতে পারছি না আমাকে আমার কাজিনরা নিয়ে গল্প জুড়ে দিল আমিও ওদেরকে তাল মিলিয়ে হ্যাঁ না উত্তর দিতে থাকলাম। তারপর গিয়ে বাসর ঘরে গিয়ে ঢুকলাম দেখলাম তৃষ্ণা ঘোমটা দিয়ে বসে আছে তাই দেরি না করেই দ্রুত ওর কাছে গেলাম আর খাটে বসলাম তারপর ঘোমটা তুলে ওর দিকে তাকালাম তারপর ঝট করে জড়িয়ে ধরলাম। বুকের ভিতর যে খরার খা খা মরুভূমি ছিল তাতে যেন এক পশলা বৃষ্টি নামল।

–কি গো ডাক্তার বাবু বুকের ভিতর ঢুকিয়ে ফেলবেন নাকি? হুম?

—হুম ঢুকিয়ে রাখবো, জানো কাল থেকে আমার কি অবস্থা হয়েছিল? ভাবলাম বিয়ের পরই তোমার কাছে যাব কিন্তু দেখ এই মাত্রই তোমার কাছে আসতে পারলাম

–হুম জানিত কিন্তু কি করব বলো এসব তো মানতেই হয় তাইনা? থাক বাবু মন খারাপ করে না?আচ্ছা বাদ দাও এখন আমায় একটু ছাড় না

Comments

Scroll To Top